ক্রমাগত লোকসান গুনতে থাকায় ভারতে উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফোর্ড। দেশটিতে দুটি কারখানা রয়েছে তাদের। একটি অবস্থান গুজরাটের সানন্দে আর অন্যটি চেন্নাইয়ে।


 গত 9 সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে গত 10 বছরে ভারতে ব্যবসা করতে গিয়ে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি লোকসান হয়েছে। আর নতুন গাড়ির চাহিদাও তেমন নেই। তাই চেষ্টা থাকার পরও দীর্ঘকালীন লাভের কোন পথ খুঁজে পায়নি তারা। ফোর্ড তার বিবৃতিতে আরও জানিয়েছে ভবিষ্যতে আইকনিক গ্লোবাল যানবাহন ও বৈদ্যুতিক SUV গাড়ি বানাতে চায় তারা। তবে সেসব গাড়ি ভারতের বাজারের জন্য তৈরি করা হবে কিনা এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি প্রতিষ্ঠানটি। পরিকল্পনা অনুযায়ী 2021 সালের শেষভাগ এর মধ্যে সানন্দে থাকা যানবাহন সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হবে। অপরদিকে 2022 সালের দ্বিতীয় ভাগের মধ্যেই চেন্নাই থাকা যানবাহন ও ইঞ্জিন উৎপাদন কারখানা বন্ধ করে দেয়া হবে। 


ব্রাজিলের তিনটি কারখানা বন্ধের এক বছরেরো কম সময়ের মধ্যে তারা ভারতীয় উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। এশিয়ার গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠতে না পারায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। তবে উৎপাদন বন্ধ করে দিলেও গাড়ির বিক্রয়োত্তর সেবা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি পরবর্তী সময়ে দেশটিতে গাড়ি রপ্তানি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে তারা।


 25 বছর আগে ভারতে এসেছিল মার্কিন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফোর্ড। জনপ্রিয় হয়ে উঠতে না পারায় প্রতিযোগিতা হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদেরকে এদেশের গাড়ির বাজারে তাদের অংশীদারিত্ব মাত্র 2%। তবুও সব ধরনের গাড়ি তৈরির হিসেবে ভারতে তাদের অবস্থান নবম। এর আগে 2017 সালে ভারতের বাজারে ছেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি বড় প্রতিষ্ঠান 'জেনারেল মোটরস'। পরবর্তীতে একই পথ অনুসরণ করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মোটর সাইকেল তৈরির প্রতিষ্ঠান harley-davidson। সব মিলিয়ে গত কয়েক বছরে পাঁচটি গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে বিদায় নিয়েছে। সেই তালিকায় এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে ফোর্ডের নাম.


 আরও পড়ুন:বলিউডের সিনেমায় জয়া, বিপরীতে নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত ছেড়ে যাওয়া গাড়ি তৈরির কারখানার মধ্যে সবচেয়ে বড় ফোর্ড। এভাবে একের পর এক বড় বড় কোম্পানির ভারত ছেড়ে চলে যাওয়ায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদি সরকার। বিরোধীদের অভিযোগ সরকারের নীতির ব্যর্থতার কারণে বন্ধ হচ্ছে কারখানায। বেকারত্বের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন জানিয়েছে। ভারতে কারখানা বন্ধ করে দিলে প্রায় 4 হাজার ফোর্ড কর্মী তাদের চাকরি হারাবেন।


অপরদিকে ডিলাররা জানিয়েছেন ফোর্ডের কারখানা বন্ধ হওয়ায় কাজ হারানোর আশঙ্কা রয়েছে 40 হাজারের বেশি কর্মী। তবে সরকারি দল বলছে সরকারের নীতি নয়, কারখানা বন্ধ হওয়ার জন্য কোম্পানিটির ভুল কৌশল ও গাড়ি শিল্পের সমস্যা দায়ী। ফোর্ডের বিক্রি কমলেও অন্য কয়েকটি কোম্পানির গাড়ি বিক্রি বেড়েছে। তারা মুনাফা করলেও ফোর্ড চাহিদার অভাবকে দায়ী করছে। এর কারণ ফোর্ড ভারতের বাজারের সঙ্গে খাপ খাইয়ে কমদামের গাড়ি আনতে পারেনি। বাজার অর্থনীতিতে যারা প্রতিযোগিতা করতে পারবে তারাই টিকে থাকবে।

 আরও পড়ুন:মসজিদে অশালীন অভিনয় করেছেন সাবা কামার!

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন